প্রতিবন্ধী শিশু কাকে বলে- What is a disabled child?

 

 প্রতিবন্ধী শিশু কাকে বলে- What is a disabled child?

আমাদের চারপাশে কিছু শিশু থাকে যারা অন্যান্য সাধারণ শিশুদের মতো নয়। তাদের শারীরিক গঠন আলাদা, এবং তাদের আচরণও স্বাভাবিকের তুলনায় ধীর বা সমস্যাযুক্ত। কিছু শিশুর চোখে ভালোভাবে দেখা যায় না, কারো হাঁটাচলায় সমস্যা থাকে, কারো মনে বা বোঝার ক্ষমতায় কিছু দেরি হয়, আবার কিছু শিশু বয়সের তুলনায় শিশুদের মতো আচরণ করে। এসব শিশু নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার।

প্রতিবন্ধী শিশু কাকে বলে- What is a disabled child?


এরা প্রতিবন্ধী শিশু। এগুলোকে "বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু" বলা হয়, কারণ তাদের পূর্ণ বিকাশের জন্য বিশেষ যত্ন এবং প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। এসব শিশুদের জীবনযাত্রার উন্নতি ও সহায়তার জন্য আমাদের সবার মধ্যে তাদের সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণে ৩রা ডিসেম্বর বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস হিসেবে পালিত হয়।


পোষ্ট সূচিপত্র:প্রতিবন্ধী শিশু কাকে বলে- What is a disabled child?

  • ভূমিকা
  • শারীরিক প্রতিবন্ধী কাকে বলে-What is physically disabled?
  • দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কাকে বলে-What is visually impaired?
  • শ্রবণ প্রতিবন্ধী কাকে বলে-What is hearing impaired?
  • বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কাকে বলে-What is intellectual disability?
  • প্রতিবন্ধী শিশুর প্রতি পরিবারের দায়িত্ব
  • প্রতিবন্ধী শিশুর প্রতি সমাজের দায়িত্ব
  • উপসংহার

ভূমিকা

আমাদের আশেপাশে বা সমাজে অনেক ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা শিশু রয়েছে। তারা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার—কেউ শারীরিক প্রতিবন্ধী, কেউ মানসিক প্রতিবন্ধী, কেউ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, আবার কেউ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। আমাদের উচিত সদা তাদের প্রতি সদয় আচরণ ও ভালো ব্যবহার প্রদর্শন করা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি পরিবার ও সমাজের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। দুঃখজনকভাবে, অনেক সময় প্রতিবন্ধী শিশুরা সমাজ এবং পরিবারে বিভিন্ন ধরনের অসম্মান বা লাঞ্ছনার শিকার হয়। তাদেরকে অনেক ক্ষেত্রে খারাপ চোখে দেখা হয়, এবং তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়, যা তারা কখনোই আশা করেন না। আমাদের উচিত প্রতিবন্ধী শিশুদের সঙ্গে সদয় ও সম্মানজনক আচরণ করা এবং তাদেরকে এমনভাবে তৈরি করা, যাতে তারা সমাজে ভালো কিছু করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী কাকে বলে-What is physically disabled?

যাদের হাত বা পা অসম্পূর্ণ, দুর্বল বা যাদের দেহের কোনো অংশ ব্যবহারে অক্ষম, যার ফলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে সমস্যা হয়, তাদেরকে শারীরিক প্রতিবন্ধী বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, পায়ের গঠনে ত্রুটি থাকলে চলাফেরায় সমস্যা হতে পারে, অথবা হাতের গঠনে ত্রুটি থাকলে কাজ করতে অসুবিধা হয়। যদি বুদ্ধিগত কোনো সমস্যা না থাকে, তবে শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু সাধারণ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে সক্ষম। তবে তাদের শারীরিক সমস্যার জন্য বিভিন্ন সহায়ক উপকরণের সাহায্যে চলাফেরা করতে হয়, যেমন-ক্রাচ, ওয়াকার, হুইলচেয়ার ইত্যাদি। তাদের চলাফেরার সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় স্থানে ঢালু রাস্তা বা শিডির স্থানের ব্যবস্থা করলে তাদের চলাচলে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কাকে বলে-What is visually impaired?

যারা চোখে দেখতে পারেন না বা এমন কোনো দৃষ্টি সমস্যা রয়েছে, যার কারণে জীবনের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে অসুবিধা হয়, তাদেরকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বলা হয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের চোখে দেখার সমস্যা থাকায় তাদের চলাফেরা এবং কাজকর্ম ধীরে হয়, এবং এ কারণে তারা পরনির্ভর হয়ে থাকে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতার ধরন এবং মাত্রা বিভিন্ন রকম হতে পারে, যেমন—অন্ধত্ব এবং আংশিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা।

অন্ধ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখতে পান না বা উজ্জ্বল আলো আসলে তার গতিপথও বুঝতে পারেন না। তবে তারা অঙ্ক, সংখ্যা এবং ভাষার ধারণা প্রাপ্তিতে সাধারণ শিশুদের মতোই হয়। তারা স্পর্শের মাধ্যমে বস্তু চিনতে পারে এবং বস্তুর নাম শেখে। জন্মগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা অন্যদের থেকে তাদের পার্থক্য বুঝতে পারে না, তবে যেসব দৃষ্টিসম্পন্ন শিশু দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার কারণে দৃষ্টি হারায়, তাদের মনোবেদনা অনেক বেশি হয়।

আংশিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা দূরের জিনিস ভালোভাবে দেখতে পারেন না, এবং কাছের জিনিসও অস্পষ্ট দেখতে পারেন, যার কারণে তাদের কাজ করতে অসুবিধা হয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ শিক্ষার একটি পদ্ধতি হলো ব্রেইল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে স্পর্শের মাধ্যমে উঁচু ফোটা তৈরি করে বর্ণ ও সংখ্যা লিখে শিক্ষা দেওয়া হয়।

শ্রবণ প্রতিবন্ধী কাকে বলে-What is hearing impaired?

যাদের শোনার ক্ষমতা কম বা নেই, তাদের কথা শোনা বা কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এই ধরনের ব্যক্তিদের জন্য "বধির", "কানা", বা "শ্রবণ প্রতিবন্ধী" শব্দ ব্যবহার করা হয়। একটি স্বাভাবিক শিশু শব্দ শুনে, তারপর তা থেকে শেখে কথা বলতে। কিন্তু শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুরা শব্দ শুনতে পারে না, তাই তারা কথা বলতে শিখতে পারে না। যদি জন্ম থেকেই বা কথা শেখার আগেই এই সমস্যা হয়, তবে তাদের ভাষার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

এই সমস্যা কখনো অল্প, কখনো গুরুতর হতে পারে। অল্প সমস্যা থাকলে তারা কিছুটা জোরে কথা বললে শব্দ শুনতে পায়, তবে গুরুতর শ্রবণ প্রতিবন্ধী হলে তারা কোনো শব্দই শুনতে পায় না। তারা কথা বলার পরিবর্তে সাধারণত অঙ্গভঙ্গি বা ইশারার মাধ্যমে তাদের চাহিদা প্রকাশ করে। যেহেতু তাদের কথা বোঝা যায় না, তাই তারা অনেক সময় হতাশাগ্রস্ত থাকে।

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কাকে বলে-What is intellectual disability?

যাদের বুদ্ধি বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কম থাকে, ফলে তারা তার সমবয়সীদের মতো আচরণ করতে পারে না, তাদেরকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বলা হয়। শিশুরা বড় হওয়ার সাথে সাথে এই সমস্যা ধরা পড়ে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীতারও বিভিন্ন মাত্রা থাকে, যেমন—মৃদু, মধ্যম এবং গুরুতর।

প্রতিবন্ধী শিশু কাকে বলে- What is a disabled child?



**মৃদু বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা:** এদের বুদ্ধি ৮ থেকে ১১ বছরের শিশুদের মতো হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তারা ১১ বছরের স্বাভাবিক শিশুদের মতো লেখাপড়া বা কাজ করতে পারে। বিশেষ শিক্ষা দিয়ে তাদের আত্মনির্ভরশীল করা সম্ভব।

**মধ্যম বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা:** এদের বুদ্ধি ৬ থেকে ৮ বছরের শিশুদের মতো। ফলে ১৮ বা তার বেশি বয়সে তারা ৬-৮ বছরের শিশুর মতো আচরণ করে। তাদের মধ্যে কথার ভুল উচ্চারণ বা শারীরিক সমস্যা যেমন-শিশুসুলভ ভাষা, ত্রুটিপূর্ণ উচ্চারণ ইত্যাদি থাকতে পারে। তবে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিলে তারা কিছু শিখতে পারে। এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হলো তাদের পরনির্ভরশীলতা কমানো। এক্ষেত্রে, শ্রমভিত্তিক কাজ যেমন—প্যাকেট করা, সিল মারা, বেকারির কাজ ইত্যাদি শেখানো হয়।

**গুরুতর বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা:** এদের বুদ্ধি এতটাই কম থাকে যে, তারা ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মতো আচরণ করে। তারা খাওয়া, পরিচ্ছন্নতা বা টয়লেটের কাজ করতে অন্যদের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল থাকে। তাদের মধ্যে নানা ধরনের আচরণগত সমস্যা থাকতে পারে। এদের জীবন পরিচালনা করতে অন্যদের তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়। তবে বিশেষ যত্ন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন অভ্যাস উন্নত করা সম্ভব।

যতটুকু মাত্রায় প্রতিবন্ধী, তার যদি বিশেষ যত্ন ও সহায়তা দেওয়া হয়, তাহলে সে তার সক্ষমতা অনুযায়ী আচরণ করতে পারে। অন্যদিকে, বিশেষ যত্নের অভাবে তার ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ ঘটতে পারে না, এবং তার আচরণের অবনতি হতে পারে।

এছাড়াও, অনেক সময় একজনের একাধিক প্রতিবন্ধকতা থাকে, যেমন—শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী, বুদ্ধি ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ইত্যাদি। প্রতিবন্ধিতার মাত্রা গুরুতর হলে তা সহজে সনাক্ত করা যায়। এই ধরনের প্রতিবন্ধীরা খাবার খাওয়া এবং টয়লেটের কাজের জন্য অন্যদের উপর নির্ভরশীল থাকে, বা বিশেষ সরঞ্জাম ছাড়া চলাফেরা করতে পারে না। তবে মৃদু বা মাঝারি মাত্রার প্রতিবন্ধিতা সনাক্ত করা কিছুটা কঠিন হয়।


একটি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের সঙ্গে পরিচিত থাকলে, অতি সহজে বুঝা যায় শিশুটি প্রতিবন্ধী কিনা। স্বাভাবিক শিশুর মতো, প্রতিবন্ধী শিশুরও মৌলিক চাহিদা থাকে—ভালোবাসা, উপযুক্ত খাবার, বিশেষ যত্ন এবং প্রাথমিক উদ্দীপনা।

প্রতিবন্ধী শিশুর প্রতি পরিবারের দায়িত্ব

প্রতিবন্ধী শিশুর প্রতি পরিবারের দায়িত্ব সম্পর্কে জানার আগে, এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, প্রতিবন্ধী শিশুর কারণে পরিবার কী ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়ে। যখন পরিবারটি সন্তানের অস্বাভাবিকতা বুঝতে পারে, তখন তারা প্রথমে চিকিৎসকের কাছে যায়। চিকিৎসকের কাছে সন্তানের প্রতিবন্ধিতার খবর শুনে মা-বাবা বিষয়টি সহজে মেনে নিতে পারেন না। অনেক সময় তারা একাধিক চিকিৎসকের কাছে ছোটাছুটি করেন, যার ফলে দেরি হয়ে যায়। এর ফলে শিশুটি প্রাথমিক উদ্দীপনা এবং বিশেষ যত্ন পেতে বিলম্বিত হয়।প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম হওয়ার পর, অনেক মায়ের মন ভেঙে যায়। কখনো কখনো মাকে এ ধরনের সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য দোষারোপ করা হয়, যার ফলে তাকে মানসিকভাবে আরো চাপে পড়তে হয়। সন্তানটির দেখাশোনার জন্য মায়ের ওপর প্রচন্ড কাজের চাপ পড়তে থাকে, এবং এ কারণে তিনি শিশুটির প্রতি বাড়তি যত্ন নিতে উৎসাহ পান না। প্রতিবন্ধী শিশুর চিকিৎসা, বিশেষ যত্ন, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি জন্য অতিরিক্ত শ্রম, সময়, ধৈর্য এবং যথেষ্ট অর্থের প্রয়োজন হয়, যা পরিবারের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি পরিবারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে, যেমন:

1. **ভালোবাসা প্রদান:** প্রতিবন্ধী শিশুকে অন্য কোনো স্বাভাবিক শিশুর মতোই ভালোবাসা দিতে হবে। পরিবারের সদস্যদের, বিশেষ করে মা-বাবা, ভাই-বোনদের কাছ থেকে যদি সে ভালোবাসা পায়, তবে প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-স্বজনও তাকে সমানভাবে ভালোবাসবে।

2. **বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ:** শিশুর প্রতিবন্ধিতা বোঝার পর যত দ্রুত সম্ভব তার প্রতিবন্ধিতার ধরণ অনুযায়ী বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এর উদ্দেশ্য হলো শিশুটিকে জীবনের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম শিখিয়ে দেওয়া এবং তার সক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষা প্রদান করা।


3. **বিশেষ যত্ন ও চিকিৎসা সেবা:** শিশুর জন্য বিশেষ যত্ন, চিকিৎসা সেবা এবং সহায়ক উপকরণের ব্যবস্থা করতে হবে, যেন তার দৈনন্দিন জীবনযাপন সহজ হয়।

4. **সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ:** শিশুকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে সামাজিক অনুষ্ঠানে, যেমন পিকনিক, বিয়ে, শিশু পার্ক, মেলা ইত্যাদিতে নিয়ে যেতে হবে, যাতে সে অন্যদের সাথে মেলামেশা করতে পারে এবং তার মনোবল বৃদ্ধি পায়।

5. **সুষম খাবারের ব্যবস্থা:** প্রতিবন্ধী শিশুরা স্বাভাবিক শিশুদের তুলনায় বেশি অপুষ্টির শিকার হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে অপুষ্টির কারণে প্রতিবন্ধিতাও হতে পারে, যেমন ভিটামিন এ এর অভাবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা দেখা যেতে পারে। তাই প্রতিবন্ধী শিশুটির জন্য সুষম খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তার শারীরিক ও মানসিক উন্নতি হয়।

6. **পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণ:** প্রতিবন্ধী শিশুর যত্নে পরিবারে সকল সদস্যকে, বিশেষ করে বাবা-মা এবং ভাইবোনদের অংশগ্রহণ করতে হবে, যেন শিশুটি পুরো পরিবার থেকে সমর্থন ও ভালোবাসা পায়।

প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি এই ধরনের দায়িত্বশীল আচরণ শিশুটির সুস্থ বিকাশ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিবন্ধী শিশুর প্রতি সমাজের দায়িত্ব

যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী শিশুটিকে সঙ্গ দেওয়া এবং তার দেখাশোনার দায়িত্ব আমরা নিজেই নিতে পারি। আমরা প্রতিবন্ধীদের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত খেলাধুলার আয়োজনও করতে পারি। যেমন—
- **দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের** জন্য গল্প শোনানো,
- **শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের** সঙ্গে দাবা খেলা,
- **বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের** সঙ্গে গান গাওয়া, গল্প বলা, ছবি আঁকা ইত্যাদি।


এছাড়া, যদি এলাকায় কোনো প্রতিবন্ধী দরিদ্র হয়ে থাকে, তবে তার জন্য **আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা** করতে পারি।

বাচ্চারা সাধারণত প্রতিবন্ধী শিশুকে দেখে ভয় পেতে পারে, তাই আমরা তাদের মধ্যে এই ভয় দূর করার জন্য ভূমিকা রাখতে পারি। প্রতিবন্ধী শিশুর সমস্যা এবং সীমাবদ্ধতা সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিলে, সেই শিশুদের জন্য **স্বাভাবিক শিশুরা** হতে পারে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহায়ক।

এছাড়া, **ইতিবাচক মনোভাব** নিয়ে প্রতিবন্ধী শিশুর প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন এবং নানাভাবে তার সাহায্যে এগিয়ে আসা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এতে করে তারা সমাজে সুন্দরভাবে মিশে যেতে পারে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে।

উপসংহার


প্রতিবন্ধী শিশু কাকে বলে- What is a disabled child?


স্বাভাবিক শিশুরা সহজেই মেলামেশার মাধ্যমে তার চারপাশের পরিবেশ থেকে বিভিন্ন প্রকার উদ্দীপনা পায়। কিন্তু প্রতিবন্ধী শিশুদের পক্ষে তার চারপাশের জগতকে জানা ও বোঝা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। তাই এদের জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি যত্ন, বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। আমাদের প্রচলিত সাধারন শিক্ষা ব্যবস্থা স্বাভাবিক শিশুর উপযোগী করে তৈরি করা হয়। প্রতিবন্ধী শিশুরা সাধারণ বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পরবর্তী সময়ে এই শিক্ষা গ্রহণ সক্ষম হয় না। তার জন্য দরকার প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষ শিক্ষা। শিশু যত ছোট অবস্থায় এই উদ্দীপনা বা বিশেষ শিক্ষা পায় তত তাড়াতাড়ি তার আচরণের উন্নয়ন ঘটে এবং তার সক্ষমতা বাড়ে।

 প্রতিবন্ধী শিশুটির পরিবারের প্রতি যতভাবে সম্ভব সহযোগিতার হাত বাড়ানো প্রয়োজন। আমাদের সব কাজের মধ্যে বোঝাতে হবে যে প্রতিবন্ধী শিশুটির পাশে আমরাও আছি। সমাজের সবার অফুরন্ত ভালোবাসা তাদের এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। তাদের জগতটাকে সহজ ও সুন্দর করে তুলবে। যে শিশুর বিকাশ বিলম্বিত বিশেষ যত্ন, মনোযোগ ও ভালোবাসায় সে আরও বেশি সক্ষম ও স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। এজন্য আমাদের সকলের অবশ্যই প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি ইতিবাচক আচরণ করা উচিত।

    Comments

    Popular posts from this blog

    কমলা গাছের যত্ন এবং পরিচর্যার পদ্ধতি

    ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায় - অনলাইনে থেকে কিভাবে ইনকাম করার উপায় ২০২৪

    অনলাইনে টাকা ইনকাম করার কিছু সহজ উপায়