কমলা গাছের যত্ন এবং পরিচর্যার পদ্ধতি
আপনি যদি কমলা গাছের সঠিকভাবে যত্ন নিতে পারেন, তাহলে আপনার বাড়ির আশেপাশের
খোলা জায়গায় কমলার চাষ করতে পারবেন। কমলা চাষ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে গাছের
যত্ন নিতে হবে এবং সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে হবে।
পোস্ট সূচিপত্র: কমলা গাছের যত্ন এবং পরিচর্যার পদ্ধতি
- ভূমিকা
-
কমলা গাছের যত্ন: উপস্থাপনা -কমলা গাছের পরিচর্যা
-
কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছের পরিচর্যা
-
টবে কমলা গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছের যত্ন
- কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার
- উপসংহার
ভূমিকা
কমলা চাষে উপযুক্ত অঞ্চলগুলি:
আমাদের দেশে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং পঞ্চগড় জেলা এই
ফলগুলি চাষের জন্য উপযুক্ত হতে পারে। এই অঞ্চলগুলিতে কমলা লেবু চাষের জন্য
বিশেষভাবে সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, সমতল অঞ্চলগুলিতেও কমলালেবু চাষে সফলতা অর্জন
করা সম্ভব হয়েছে।
কমলা গাছের যত্ন: উপস্থাপনা -কমলা গাছের পরিচর্যা
বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ করছেন। আপনি যদি সঠিকভাবে
কমলা গাছের যত্ন নিতে পারেন, তাহলে আপনিও বাণিজ্যিকভাবে কমলার বাগান করে লাভবান
হতে পারবেন। এছাড়াও, আপনি যদি একটি ছোট খোলা জায়গায় কমলা গাছ লাগাতচান,
সেটাও করতে পারেন।
কমলা গাছ লাগাতে হলে অবশ্যই আপনাকে বিশেষ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
সঠিক পরিচর্যা বা যত্ন না নিলে, গাছ ঠিকমতো বাড়বে না এবং আপনি
কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন না।
তাই, কমলা গাছ লাগানোর আগে আপনার প্রয়োজন সঠিক পদ্ধতিতে কমলা চাষ
সম্পর্কে বিস্তারিত জানা। আসুন, কমলা গাছের পরিচর্যা, যত্ন, টবে কমলা
গাছের পরিচর্যা এবং কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
জেনে নেই।
কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছের
পরিচর্যা
কমলা চাষ করতে চাইলে অবশ্যই কমলা গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে
আপনার জানা উচিত। কারণ সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে তবেই আপনি ভালো
ফলন আশা করতে পারেন। অন্যথায় আপনার সময় ও শ্রম অপচয় হবে।
**কমলা গাছ লাগানোর পদ্ধতি:**
কমলা গাছ একটি লেবুজাতীয় উদ্ভিদ। যদি আপনি বীজ থেকে কমলা গাছ
লাগান, তাহলে সেই গাছ বড় হতে অনেক সময় লাগবে এবং ফল ধরতে কত
সময় লাগবে তা অনুমান করা সম্ভব নয়। তাই প্রথমেই ভালো
নার্সারি থেকে ভালো মানের কমলার চারা নিয়ে লাগাতে হবে।
কমলা গাছ লাগানোর পূর্বে আপনাকে মাটি প্রস্তুত করতে হবে।
এজন্য ৬০×৬০×৬০ সেন্টিমিটার গর্ত করতে হবে এবং গর্তে ১০ কেজি
গোবর সার, ২০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ২০০ গ্রাম এমপি সার এবং
৫০০ গ্রাম চুন প্রয়োগ করতে হবে। এরপর ২০ থেকে ২৫ দিন
অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আপনি কমলা লেবুর চারা গুলো সেই
গর্তে ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় পরিচর্যা
করতে হবে।
**সেচ প্রদান:**
কমলা গাছের জন্য সেচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে সেই গাছে
সেচ দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, বর্ষাকালে গাছ লাগালে ভালো হয়
এবং গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই আপনি বর্ষাকালে
গাছ লাগাবেন।
**সার প্রদান:**
গাছের গোড়ায় প্রয়োজন অনুযায়ী সার দিতে হবে। প্রত্যেকটি
গাছে বছরে গড়ে ৪৫০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম নাইট্রোজেন সার
প্রয়োগ করা উচিত। এর পাশাপাশি পটাশিয়াম ও ফসফরাস সহ
অন্যান্য সারের প্রয়োজন হতে পারে।
**ছাঁটাই ও রোগ প্রতিকার:**
কমলা গাছগুলোকে মাঝে মাঝে ছাঁটাই করতে হবে এবং কাটা
অংশগুলোতে ফাংগিসাইড লাগাতে হবে। কমলা গাছের পরিচর্যা, কমলা
গাছের যত্ন, টবে কমলা গাছের পরিচর্যা এবং কমলা গাছের রোগ ও
প্রতিকার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে নিচের লিঙ্কগুলি
পরীক্ষা করতে পারেন।
টবে কমলা গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছের
যত্ন
যদি আপনি টবে কমলা গাছ চাষ করতে চান, তাহলে অবশ্যই
ভালোভাবে পরিচর্যা করতে হবে। এজন্য কমপক্ষে ১.৫ থেকে ২
ফুট x ১.৫ থেকে ২ ফুট সাইজের টব বা ড্রাম ব্যবহার করতে
হবে। এর থেকে ছোট আকারের টবে বা ড্রামে চায়না কমলার
চারা রোপণ করা উচিত নয়। কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা বা
টবে কমলা গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা
হলো।
**মাটির প্রস্তুতি:**
মাটি প্রস্তুতির সময় একটি মিশ্রণ সার তৈরি করতে হবে,
যা মধ্যে গোবর বা কম্পোস্ট, ইউরিয়া সার, টিএসপি,
এমওপি সার, জিংক সালফেট এবং সলুবোর বোরন সার
অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এরপর সেই মিশ্রণ সার নির্দিষ্ট
পরিমাণে প্রত্যেকটি টবে দিতে হবে।
পরে টবে নার্সারি থেকে ক্রয় করা ভালো মানের কমলার
চারা লাগাতে হবে। যদি সঠিকভাবে টবে কমলা গাছের
পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই
গাছগুলো ভালোভাবে বেড়ে উঠবে।
অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই আপনি গাছগুলো থেকে ফল
পাবেন। কমলা গাছের পরিচর্যা, যত্ন, টবে কমলা গাছের
পরিচর্যা এবং কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে
আরও বিস্তারিত বিবরণ নিচে তুলে ধরা হলো।
কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার
কমলা গাছের কিছু সাধারণ রোগ রয়েছে, যা
সম্পর্কে না জানলে রোপণকৃত গাছ অকালেই মারা
যেতে পারে। নিচে কমলা গাছের রোগ ও তার
প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
**কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার: পাতা খেকো
পোকা**
আপনার রোপণকৃত কমলা গাছে যদি পাতা খেকো পোকা
বাসা বাঁধে, তাহলে তা গাছের জন্য খুবই
ক্ষতিকর। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে ১০ মিলি
মেটাসিস্টক্স ১০ লিটার পানিতে অথবা ৪ চা চামচ
ডায়াজিনন ৬০ ইসি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছের
পাতায় স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে। এতে এই
রোগ দূর হবে।
**কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার: বাকল ছিদ্রকারী
পোকা**
বাকল ছিদ্রকারী পোকা গাছের বাকল ছিদ্র করে এবং
বাকলের রস পুরোপুরি শুষে নেয়। এ ধরনের সমস্যা
দেখা দিলে ১০ মিলি বা ২ চা চামচ রিপকর্ড ১০
ইসি কীটনাশক ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে সারা গাছে
স্প্রে করতে হবে।
**কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার: গ্রীনিং রোগ**
এ রোগ দেখা দিলে কমলা গাছের পাতা হলুদ হয়ে
যাবে এবং ধীরে ধীরে শিরা দুর্বল হয়ে পড়বে।
এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে, ১০ লিটার পানিতে
৫ চা চামচ ম্যালাথিয়ন ০.০৪% অথবা সুমিথিয়ন
৫০ ইসি মিশিয়ে পুরো গাছে স্প্রে করতে হবে।
এই রোগগুলির সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা থাকলে
সহজেই কমলা গাছের চাষ করা সম্ভব।
উপসংহার
কমলা গাছের পরিচর্যা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ যাতে তা সুস্থ এবং
উন্নত অবস্থায় থাকে।
কমলা গাছের জন্য ভালো মাটি প্রয়োজন
যাতে গাছের নিকটস্থ রুট সিস্টেম
ঠিকমতো পোষণ পাওয়ায়।
প্রতি মাসে পোষক কমলা গাছের জন্য সাবধানতা
অবশ্যই পানির সর্বোত্তম
প্রবাহক্রমের মধ্যে থাকতে হবে।
অতিরিক্ত পানির সাপেক্ষে গাছের
রেহাই করা যেতে পারে এবং সঙ্কটের
সৃষ্টি হতে পারে।
সার দেওয়া উচিত, যেটি কমলা গাছের
উন্নত উদ্ভিদ বৃদ্ধি করতে সাহায্য
করে।
কমলা গাছের যত্নের জন্য বিশেষভাবে
রক্ষা করতে হবে যারা কীট, রোগ, এবং
জৈব আক্রমণ সম্পর্কে।
কমলা গাছ এর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়
রক্তনদ স্তর অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।
এটি গাছের উন্নত ফলনের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ। নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম
ইত্যাদি পোষকাত্মক সার কমলা গাছের
জন্য প্রয়োজন।
প্রতি মাসে গাছের অপ্রয়োজনীয়
কাটা-বুলি পরিষ্কার করা উচিত। এটি
গাছের স্বাস্থ্যের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ।
গুরুত্বপূর্ণ হলেও, যেকোনো
প্রয়াসের আগে স্থানীয় প্রাথমিকভাবে
উপদেশ এবং তথ্য অনুসরণ করা
জরুরি।
Comments
Post a Comment